Tuesday, October 25, 2016
কালিয়াকৈরে ঘরে ঢুকে স্কুলছাত্রীকে হত্যা
Tuesday, October 25, 2016 by Unknown
কালিয়াকৈরে ঘরে ঢুকে স্কুলছাত্রীকে হত্যা
![কালিয়াকৈরে ঘরে ঢুকে স্কুলছাত্রীকে হত্যা](http://www.jugantor.com/assets/images/news_images/2016/10/26/thumbnails/3_71120.jpg)
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার প্রেম প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় এক
স্কুলছাত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার নিজ ঘর থেকে
গলায় ওড়না পেঁচানো ওই ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত মুন্নি আক্তার
কুতুবদিয়া নতুনপাড়ার কাঁচামাল ব্যবসায়ী শহীদুল ইসলামের মেয়ে। সে স্থানীয়
চাপাইর বিবি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী (জেএসসি পরীক্ষার্থী)।
পরিবারের অভিযোগ প্রেম প্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় আরাফাত নামের এক বখাটে ঘরে
ঢুকে মুন্নিকে হত্যা করেছে। ঘটনার পর থেকে ঘাতক পলাতক রয়েছে।
দুপুর ১২টার দিকে নিহতের ঘর থেকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য
গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
ঘাতক আরাফাত গাজীপুর জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলার চাপাইর বেপারিপাড়ার বাসিন্দা আতাউর সরকারের ছেলে। সে বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার পথে প্রায় ১ বছর ধরে বিভিন্ন সময় মুন্নিকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। প্রেমের প্রস্তাব দিলে রাজি না হওয়ায় কিছুদিন ধরে রাস্তায় তাকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাত। মুন্নি বিষয়টি বাব-মাকে জানায়। পরে মুন্নি বাবা-মা আরাফাতের পরিবারকে এ ব্যাপারে জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বরং উল্টো তাদের হুমকি দেয়। তাদের ভয়ে পুলিশের কাছে যেতে পারেনি মুন্নির পরিবারের লোকজন।
সোমবার রাতে পাশের আব্বাসের বাড়িতে অনুষ্ঠানে যায় তার পরিবারের লোকজন। এ সুযোগে পূর্বপরিকল্পিতভাবে মুন্নির ঘরে ঢোকে আরাফাত। রাতের কোনো এক সময় আরাফাত তাকে ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে।
মুন্নির মা রিমা বেগম বলেন, মঙ্গলবার ভোরে শব্দ পেয়ে ঘুম থেকে উঠে বাইরে বেরিয়ে আরাফাতকে মুন্নির ঘরের গলিতে দেখতে পাই। এ সময় বাড়ির ভেতরে কেন? জানতে চাইলে ওইপাড়া গেছিলাম বলেই আরাফাত সেখান থেকে দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে ঘরে গিয়ে মুন্নির লাশ বিছানার ওপর পড়ে থাকতে দেখেন তিনি।
নিহতের চাচাতো বোন বিথি আক্তার জানান, স্কুলে যাওয়া-আসার পথে বখাটে আরাফাত মুন্নিকে বিরক্ত করত। প্রেম প্রস্তাব দিত। কিন্তু মুন্নি তার প্রেম প্রস্তাবে সাড়া দিত না।
নিহতের বড় বোন পলি আক্তার বলেন, বখাটে আরাফাত মুন্নিকে বিরক্ত করত। মদ খেয়ে রাস্তাঘাটে উত্ত্যক্ত করত। তার মাকে বিষয়টি জানালে তিনি বিচারের আশ্বাস দেন। পরে আরাফাত মুখে এসিড মেরে দেয়া ও আবার বিচার দিলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আরাফাত ও তার বাবার ভয়ে আমরা কিছু বলার সাহস পেতাম না।
মুন্নির বড় ভাই রিপন হোসেন জানান, ‘আমরা অনেক গরিব। আর আরাফাতরা অনেক ধনী। আমার বোনের ঘরে রাতের বেলায় কৌশলে ঢুকে তাকে হত্যা করে পালিয়ে যায়। স্থানীয় মাতব্বরা আমার বোনের লাশ পুলিশে দিতে নিষেধ করেছে। তারা আমাদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।’
নিহতের বাবা শহীদ মিয়া বলেন, আমার মেয়েকে হত্যা করার জন্য আরাফাত আগেই ঘরের ভেতরে লুকিয়ে ছিল, তা বুঝতে পারিনি। ক’দিন আগে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে মুন্নির পথ গতিরোধ করে আরাফাত। ওই সময় সে মুন্নিকে টানাহেঁচড়া করে। বিষয়টি ওর (আরাফাত) মা-বাবাকে জানালেও তারা শাসন করেনি। এতে আরাফাত আরও ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে হুমকি দিয়েছিল। বলেছিল, তোর মাইয়ারে আমার (আরাফাত) কাছে বিয়া না দিলে তোরেও মাইরা ফেলামু, তোর মেয়েরেও মাইরা ফেলামু। তারা প্রভাবশালী বলেই ভয়ে থানায় যেতে পারেনি বলেও জানান তিনি।
চাপাইর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান সেতু বলেন, স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্তের ঘটনা আগে জানালে ব্যবস্থা নেয়া যেত। তিনি হত্যার ঘটনার সঠিক বিচার দাবি করেন।
কালিয়াকৈর থানার ওসি (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম জানান, ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। তবে এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। ঘটনার পর থেকে আরাফাত নামের ওই ঘাতক পলাতক রয়েছে।
(যুগান্তর)
Tags:
Bangladesh
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
0 Responses to “কালিয়াকৈরে ঘরে ঢুকে স্কুলছাত্রীকে হত্যা”
Post a Comment