Friday, October 21, 2016

সিলেট-জকিগঞ্জ সড়ক দূরের পথে সঙ্গী দুর্ভোগ

সিলেট-জকিগঞ্জ সড়ক

দূরের পথে সঙ্গী দুর্ভোগ

সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের দীর্ঘ অংশ এ রকম ভাঙাচোরা। চারখাই এলাকা থেকে গত মঙ্গলবার ছবিটি তুলেছেন আনিস মাহমুদ 
 
 
দেশের বিভিন্ন জেলায় সড়কগুলো বেহাল হয়ে পড়েছে। কোথাও কোথাও নির্মাণের অল্প দিনের মধ্যেই পিচ–খোয়া উঠে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে গর্তের। কোথাও সড়ক ধসে পড়েছে। এসব সড়ক নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন
 
 
সিলেট শহর থেকে সড়কপথে জেলার সবচেয়ে বেশি দূরের উপজেলা জকিগঞ্জ। সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের দূরত্ব ৯১ কিলোমিটার। এর প্রায় ৪৫ কিলোমিটারই ভাঙাচোরা ও খানাখন্দে ভরা। ফলে সিলেট ও মৌলভীবাজারের পাঁচ উপজেলার যাত্রীদের দুর্ভোগকে সঙ্গী করেই এ পথে চলতে হচ্ছে।


জকিগঞ্জ ছাড়াও বিয়ানীবাজার, কানাইঘাট ও গোলাপগঞ্জ এবং পাশের মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার মানুষ এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে। সিলেট হয়ে বড়লেখার মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত যাতায়াতও চলে এ সড়ক দিয়ে। এ সড়ক ব্যবহৃত হয় বিয়ানীবাজারের শুল্ক বন্দর-শেওলা ও সুতারকান্দি যাতায়াতেও।


স্থানীয় সাংসদ ও বিরোধীদলীয় হুইপ সেলিম উদ্দিন বলেন, সড়কটি আঞ্চলিক হলেও সিলেট জেলার তিনটি ও মৌলভীবাজারের একটি উপজেলাবাসীর চলাচলের কাজে লাগে। সড়কটি উন্নয়নে বৃহৎ পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।



সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, সিলেট থেকে গোলাপগঞ্জ উপজেলা সদর পর্যন্ত সড়ক তুলনামূলক ভালো। দুরবস্থার মধ্যে পড়তে হয় গোলাপগঞ্জ পার হলেই। বিয়ানীবাজারের চারখাই মোড় থেকে জকিগঞ্জ সদর পর্যন্ত সড়কের প্রায় ৪৫ কিলোমিটারজুড়ে বড় বড় খানাখন্দ। চারখাই থেকে সুতারকান্দি ও শেওলা শুল্কবন্দর লাগোয়া প্রায় ১২ কিলোমিটার সড়কও ভাঙাচোরা। এ ছাড়া শাহগলি থেকে জকিগঞ্জের আটগ্রাম-কালীগঞ্জ বাজার পর্যন্ত সড়কও যান চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।



শাহগলি এলাকার বাসিন্দা মাসুম আহমদ বলেন, গত ১৭ সেপ্টেম্বর সড়কের শাহগলি এলাকায় দুর্ঘটনায় একই পরিবারের দুই কন্যাশিশুসহ তিনজন নিহত ও ১৫ জন বাসযাত্রী আহত হন। এরপর থেকে সড়কের এ অংশ ‘মরণফাঁদ’ নামে চিহ্নিত হচ্ছে।



এলাকাবাসী ও যানবাহন চালকেরা জানান, দীর্ঘ এ সড়কে যাত্রীদের পাশাপাশি চালকেরাও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হওয়ায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন যানবাহনের মালিকেরা। সড়কটি সংস্কারের দাবিতে গত ২৬ জুলাই সড়ক পরিবহন সমিতি পরিবহন ধর্মঘট পালন করে। কিন্তু কর্মসূচিতে শুধু আশ্বাস মিলেছে, কাজ হয়নি। ২০১৩ সালের পর থেকে সড়কটি আর সংস্কার করা হয়নি।



সিলেটের দক্ষিণ সুরমার কদমতলী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে বাসচালক মো. আরমান বলেন, ‘ওই সড়কে গাড়ি চালাইতে ঝুঁকি তো রয়েছেই। এ ছাড়া সময়, জ্বালানি তেল ও গাড়ির যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়। এ তিন অপচয়ে যানবাহন মালিক ও চালকেরা কাহিল।’
জকিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র খলিল উদ্দিন বলেন, পৌরসভার ভেতরে জকিগঞ্জ বাজার-সংলগ্ন সড়কের অবস্থা নাজুক। সড়ক ও জনপথ বিভাগকে (সওজ) অন্তত পৌর শহরের অংশ সংস্কারের তাগাদা দিলেও সাড়া মেলেনি। ভোগান্তির কারণে এ সড়ক দিয়ে জকিগঞ্জ শহরের মানুষের যাতায়াত সীমিত হয়ে পড়েছে।









সিলেট সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ মনিরুল ইসলাম বলেন, জেলা সদর থেকে উপজেলায় যাতায়াতে দীর্ঘতম সড়ক এটি। পুরো সড়ক সওজের অধীন হওয়ায় কয়েকটি ধাপে এর সংস্কার ও উন্নয়নকাজ চালানো হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে নাজুক অবস্থা বিবেচনায় চারখাই থেকে শাহগলি পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার অংশ সংস্কারে ১০ কোটি টাকার প্রকল্পের দরপত্র আহ্বানের প্রস্তুতি চলছে। তবে কবে নাগাদ কাজ শুরু হবে, তা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।

Tags:

0 Responses to “সিলেট-জকিগঞ্জ সড়ক দূরের পথে সঙ্গী দুর্ভোগ”

Post a Comment

Donec sed odio dui. Duis mollis, est non commodo luctus, nisi erat porttitor ligula, eget lacinia odio. Duis mollis

© 2013 Shotter sondhane bd news 24. All rights reserved.
Designed by SpicyTricks